উত্তর কোরিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়া বিভক্ত হওয়ার ইতিহাস কী?
কোরিয়া একসময় ছিল শান্তি সমৃদ্ধির দেশ। ১৯১০ সালের আগে কোরিয়াতে উত্তর দক্ষিণ নামে ছিল কেবল দু'টি দিক। ১৯১০ সাল পর্যন্ত প্রায় ৬০০ বছর ধরে জসন সাম্রাজ্যের শাসনে কোরিয়া জুড়ে শান্তি বিরাজ করছিলো। কিন্তু সেই শান্তি আর বেশিদিন স্থায়ী হলো না।
(ছবি: কোরিয়ার সিউলে আগত জাপানি সৈন্যরা)
সে বছর (১৯১০ সালে) কোরিয়ার প্রতিবেশী রাষ্ট্র জাপান জোর করে কোরিয়া উপদ্বীপ দখল করে বসলো। এর মাধ্যমে কোরিয়ার বুকে জাপানি শাসন শুরু হলো।
ঐ সময়ের যুদ্ধবাজ জাপানিরা কোরিয়া দখল করেই ক্ষান্ত হলো না। প্রায় ৩৫ বছর ধরে জাপানিরা কোরিয়ানদের উপর বিভিন্নভাবে অত্যাচার করে যাচ্ছিলো। দেখতে দেখতে বিশ্বজুড়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দামামা বেজে উঠলো।
কোরিয়ার বিভক্তের সূত্রপাত:
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে কোরিয়া থেকে জাপানকে উৎখাত করতে দুই পরাশক্তি সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একসাথে ঝাপিয়ে পড়ে।
কোরিয়ার দক্ষিন দিক থেকে আক্রমণ করে মার্কিন সেনাবাহিনী এবং উত্তর দিক থেকে আক্রমণ করে সোভিয়েত কমিউনিস্ট এর রেড আর্মি। ১৯৪৫ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের যৌথ বাহিনীর কাছে জাপানী বাহিনী আত্মসমর্পণ করে।
(ছবি: সিউল ত্যাগ করছে জাপানি সেনাবাহিনী)
পরবর্তীতে কোরিয়াকে নিয়ে পরাজিত জাপানের দুই শত্রু দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েতের মধ্যে দরকষাকষি চলে। ১৯৪৫ সালের আগস্টে উভয় দেশের দুইজন মিলিটারি অফিসার ৩৮° অক্ষরেখা বরাবর কোরিয়াকে ভাগ করে নেয়।
দক্ষিণের অংশ দখল করে নেয় আমেরিকা আর উত্তরের অংশ সোভিয়েত। এরপরই উত্তরে গড়ে উঠে সোভিয়েত মদদপুষ্ট কমিউনিস্ট শাসন ব্যবস্থা এবং দক্ষিণ দিকে আমেরিকার সামরিক সরকার গঠিত হয়।
(ছবি: ৩৮° অক্ষরেখায় বিভক্ত কোরিয়া)
১৯৪৮ সালে, শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্র অধিকৃত দক্ষিণ কোরিয়াতে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। অপরদিকে সোভিয়েত সরকার উত্তর কোরিয়ার সামরিক কর্মকর্তা কিম ইল সুংকে উত্তর কোরিয়া শাসনের দায়ভার প্রদান করেন।
উত্তর কোরিয়া এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় আলাদা দুই সরকার থাকায় মতভেদ শুরু হতে থাকে এবং প্রত্যেক অংশই কোরিয়ার সার্বভৌম ক্ষমতা দাবি করতে থাকে। ফলাফল স্বরূপ শুরু হয় কোরিয়ান যুদ্ধ।
কোরিয়া যুদ্ধ:
(ছবি: কোরিয়া যুদ্ধের একটি চিত্র)
১৯৫০ সালের মাঝামাঝি কোরিয়া যুদ্ধ শুরু হয়, যা ৩ বছর স্থায়ী হয়েছিল। ১৯৫৩ সালে দু’পক্ষের মাঝে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় এবং ৩৮ ডিগ্রী সীমারেখায় দু’দেশের মাঝে তিন মাইল ব্যাপী ‘নো ম্যানস ল্যান্ড’ নির্ধারণ করা হয়।
এর মাধ্যমে দুই কোরিয়ার সম্পর্কের চূড়ান্ত ইতি ঘটে। এর মাধ্যমে কোরিয়া বিভক্তির ষোলকলা পূর্ণ হয়।
(ছবি: চুক্তিরত অবস্থায় দুই পক্ষ)
জাপানের শাসণ থেকে কোরিয়া মুক্তিই ছিল কোরিয়া বিভক্তির মূল কারণ। তবে কোরিয়া বিভাজন পূর্নতা পায় কোরিয়া যুদ্ধের মাধ্যমে।
দুই কোরিয়া সম্প্রীতি বজায় রাখতে অনেক সময় চেষ্টা করা হলেও তা এখনো সফলতার মুখ দেখেনি।
===================
If you like my content, feel free to share it on your favorite social network.
Author,
#muktarhossain
#30minuteeducation
#twolearning #muktarhossain #টুলার্নিং #two #learning #2learning
0 Comments
Please do not enter any spam link in the comment box.