অনুমোদিত চিকিৎসাকর্মীর সহায়তা নিয়ে স্বেচ্ছামৃত্যু পৃথিবীর বেশ কয়েকটি দেশেই বৈধ। সেসব দেশের মধ্যে সামনের সারিতেই রয়েছে সুইজারল্যান্ড। গত বছরও দেশটিতে অন্তত ১,৩০০ মানুষ 'সহায়তাকৃত আত্মহত্যা'-র পথ বেছে নিয়েছে।
মৃত্যু তো সবসময়ই যন্ত্রণার। তা সে মৃত্যু আকস্মিকভাবে কোনো দুর্ঘটনার শিকার হয়েই আসুক, কিংবা দীর্ঘদিন রোগে ভুগে শয্যাশায়ী অবস্থায়। এমনকি স্বেচ্ছা মৃত্যুও কখনোই পুরোপুরি কষ্টহীন নয়।
তারপরও যারা স্বেচ্ছায় তুলনামূলক ব্যথা-বেদনাহীন, অনায়াস মৃত্যু কামনা করে, তাদের জন্য এসেছে 'সারকো' নামের এক বিশেষ যন্ত্র। মাত্র এক মিনিটেই ব্যবহারকারীকে চিরতরে ঘুম পাড়িয়ে দেওয়া এই যন্ত্র সুইজারল্যান্ডে আইনি স্বীকৃতিও পেয়ে গেছে!
অনেকেই হয়তো শুনে অবাক হচ্ছেন। ভাবছেন, স্বেচ্ছা মৃত্যু বা আত্মহত্যাই যেখানে বেআইনি, সেখানে সেই কাজে সাহায্যকারী কোনো যন্ত্র কীভাবে আইনি স্বীকৃতি পায়!
তবে বাস্তবতা হলো, অনুমোদিত চিকিৎসাকর্মীর সহায়তা নিয়ে স্বেচ্ছামৃত্যু পৃথিবীর বেশ কয়েকটি দেশেই বৈধ।
সেসব দেশের মধ্যে সামনের সারিতেই রয়েছে সুইজারল্যান্ড। গত বছরও দেশটিতে অন্তত ১,৩০০ মানুষ 'সহায়তাকৃত আত্মহত্যা'-র পথ বেছে নিয়েছে। আর এবার 'সারকো' আইনি বৈধতা পাওয়ায় নতুন মরণেচ্ছুদের জন্য কাজটা আরো অনেকটাই সহজ হয়ে গেল বলে অভিমত সংশ্লিষ্টদের।
এবার চলুন জানা যাক, 'সারকো' আসলে কী ও কেমন।
যন্ত্রটি মূলত কফিন আকৃতির। এতে কৃত্রিম উপায়ে অক্সিজেন ও কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া হয়। ফলে এর ভেতরে শায়িত ব্যক্তির মৃত্যু ঘনিয়ে আসতে সময় লাগে এক মিনিটেরও কম।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এগজিট ইন্টারন্যাশনাল 'সারকো'-র প্রস্তুতকারক। সংস্থাটির পরিচালক ফিলিপ নিৎসে পরিচিত 'ডক্টর ডেথ' নামে। এই যন্ত্রের উদ্ভাবনের নেপথ্যের ব্যক্তিও তিনিই।
কীভাবে কাজ করবে যন্ত্রটি, সে সম্পর্কে গণমাধ্যমকে ধারণা দিয়েছে সংস্থাটি। তাদের দাবি, শুধু বাইরে থেকে নিয়ন্ত্রণই নয়, ভেতর থেকেও চালু করা যাবে 'সারকো'-কে।
অর্থাৎ স্বেচ্ছায় নিজের মৃত্যুকে ত্বরান্বিত করতে আগ্রহী ব্যক্তি যন্ত্রের ভেতর ঢুকে নিজে নিজেই যন্ত্রটিকে চালাতে পারবেন।
এখানেই দেখা দিতে পারে একটি বড় ধরনের সমস্যা। কারণ অতীতেও বিভিন্ন পরীক্ষানিরীক্ষার মাধ্যমে দেখা গেছে, মরণেচ্ছু ব্যক্তিরা এমন পরিস্থিতিতে অচেতন হয়ে পড়ে। ফলে পেশিশক্তি ব্যবহার করে কোনো কাজ করার মতো সক্ষমতা অধিকাংশ সময়ই তাদের আর থাকে না।
অবশ্য এগজিট ইন্টারন্যাশনালের দাবি, তারা তাদের উদ্ভাবিত যন্ত্রে এই সমস্যারও কার্যকরী সমাধান বের করেছেন।
তারা বলছে, ওই বিশেষ পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে কেবল চোখের পাতার নড়াচড়া থেকে আঁচ করেই নাকি যন্ত্রটি সঙ্কেত গ্রহণ করতে পারবে।
'ডক্টর ডেথ' ফিলিপ নিৎসে জানিয়েছেন, "আগামী বছরের মধ্যে সারকো ব্যবহারের উপযোগী হয়ে যাবে সুইৎজারল্যান্ডে।
এখন পর্যন্ত এই প্রকল্পে বহু অর্থব্যয় হয়েছে। কিন্তু আমাদের আশা, আমরা প্রয়োগের খুব কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছি।"
তবে সূত্রের খবর, ইতোমধ্যেই দুটি 'সারকো' তৈরি হয়ে রয়েছে। ভবিষ্যৎ চাহিদার কথা মাথায় রেখে আরো একটি যন্ত্রের থ্রি-ডি প্রিন্টিং শুরু করেছে এগজিট ইন্টারন্যাশনাল।
আগামী বছর থেকেই সুইজারল্যান্ডে এই পরিষেবা চালুর লক্ষ্য নিয়ে কাজ এগিয়ে নিচ্ছে তারা।
তবে 'সারকো' যতই স্বেচ্ছামৃত্যুতে আগ্রহীদের জন্য নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিক না কেন, এর বিরুদ্ধে অবস্থানকারী সমালোচকরাও কিন্তু কম সরব নয়।
তাদের মতে, এই যন্ত্রটি আসলে গ্যাস চেম্বারকে মহিমান্বিত করার চেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়। এমনটিও অনেকেই বলছে, এই যন্ত্রের মাধ্যমে আত্মহত্যাকে সব ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্যতা দেওয়ারই চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
If you like my content, feel free to share it on your favorite social network.
Author,
#muktarhossain
#30minuteeducation
#twolearning #muktarhossain #টুলার্নিং #two #learning #2learning #voiceofmuktar
- সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
0 Comments
Please do not enter any spam link in the comment box.