Header Ads Widget

Responsive Advertisement

রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করলে কী হবে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা | 30minuteeducation

 পূর্ব ইউরোপে রুশ সীমান্ত ঘেঁষা নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশ ইউক্রেন নিয়ে সংঘাতে জড়িয়েছে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র।


সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে ১৯৯১ সালে ইউক্রেন স্বাধীন হওয়ার পর দেশটিতে শুরু রুশ ও পশ্চিমের দেশগুলোর প্রভাব বিস্তারের লড়াই।


ছবি: রয়টার্স ফাইল ফটো

সংকট এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে আশঙ্কা করা হচ্ছে যেকোনো সময় ইউক্রেন দখল করে নিতে পারে রাশিয়া। দেশটিকে রুশ আগ্রাসন থেকে রক্ষায় সরব যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমের দেশগুলো।


বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, গত মঙ্গলবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সামরিক কর্মকর্তাদের বলেছেন, 'ইউক্রেন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভয়ে পিছু হটার সুযোগ নেই।'


 তিনি আরও বলেন, 'পশ্চিমের দেশগুলো আগ্রাসী নীতি থেকে সরে না আসলে কঠোর জবাব দেওয়া হবে।'


ছবি: রয়টার্স ফাইল ফটো

পুতিন মনে করেন, বর্তমানে ইউক্রেনের ক্ষমতাসীনরা 'রুশবিরোধী' কার্যক্রম চালাচ্ছেন।

 তিনি ইউক্রেনে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর 'সামরিক হস্তক্ষেপের' বিরুদ্ধে হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, এমনটি চলতে থাকলে ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।



ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ২০২১ সালের পরিসংখ্যান মতে, ইইউ জোটভুক্ত দেশে জ্বালানি রপ্তানিতে শীর্ষে রয়েছে রাশিয়া।


এর আগে, গত জুলাইয়ে প্রেসিডেন্ট পুতিন রাশিয়া ও ইউক্রেনকে 'এক জাতি' বলে ঘোষণা দেন। সোভিয়েত ইউনিয়নের ভেঙে যাওয়াকে তিনি দেখেন 'ঐতিহাসিক রাশিয়া'র ভাঙন হিসেবে।



ছবি: রয়টার্স ফাইল ফটো


গতকাল বৃহস্পতিবার রুশ সংবাদমাধ্যম স্পুতনিক জানিয়েছে—যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ফ্রান্স, জার্মানি ও আরও বেশ কয়েকটি দেশ জাতিসংঘে রাশিয়াকে সতর্ক করে বলেছে, ইউক্রেনের সীমান্ত অতিক্রম করলে রাশিয়াকে 'চরম মূল্য' দিতে হবে।


২০১৪ সালে গণআন্দোলনের মুখে ইউক্রেনে রুশপন্থি ভিক্তর ইয়ানুকোভিচ সরকারের পতন হলে ইউক্রেনের ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল করে নেয় রাশিয়া। 


শুধু তাই নয়, একই বছর রুশপন্থি বিদ্রোহীদের সমর্থন দিয়ে ইউক্রেনের পুব সীমান্তের দোনবাস অঞ্চল নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয় রাশিয়া। এখন পুরো ইউক্রেন কি দখলে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে পুতিন সরকার?


ইউক্রেনের পূর্বে রাশিয়া ও পশ্চিমে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। দেশটিতে যেমন রয়েছে রুশপন্থি মানুষ তেমনি রয়েছে পশ্চিমাপন্থিও। সাবেক সোভিয়েতভুক্ত এ দেশের মোট জনসংখ্যার ১৭ শতাংশের বেশি রুশভাষী।


স্বাধীন ইউক্রেনে নিজেদের প্রভাব অটুট রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছে রাশিয়া। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ইউক্রেনের ঘনিষ্ঠতাকে সব সময় প্রতিহতের চেষ্টা করেছে পরাশক্তিধর দেশটি।



রাশিয়ার চাওয়া

ইউক্রেন যেন প্রতিবেশী রাশিয়ার জন্য হুমকি না হয় সেটাই পুতিনের মূল লক্ষ্য। দেশটিতে নিজেদের স্বার্থ বজায় রাখার পাশাপাশি রাশিয়া চায় ইউক্রেনকে যেন কখনই ন্যাটো সামরিক জোটের সদস্য না করা হয়। 


টাইম ম্যাগাজিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে শতভাগ নিশ্চয়তা চায় রাশিয়া।


শুধু ইউক্রেন নয়, রাশিয়ার ককেশীয় প্রতিবেশী জর্জিয়াকেও ন্যাটোর সদস্য না করার দাবি জানিয়েছে রাশিয়া।


ন্যাটো নিয়ে রাশিয়ার দাবি এখানেই শেষ হয়নি। এ তালিকায় আরও আছে—পূর্ব ইউরোপে ন্যাটোর সামরিক কর্মসূচি বন্ধ করা হোক।


 ন্যাটোভুক্ত পোল্যান্ড, এস্তোনিয়া, লাতভিয়া ও লিথুনিয়া থেকেও সরিয়ে নেওয়া হোক ন্যাটোর কমবেট ইউনিট।


এ ছাড়া, পোল্যান্ড ও রোমানিয়াসহ পূর্ব ইউরোপের অন্যান্য দেশে যেন ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন না করে মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটটি।


কৃষ্ণ সাগরে পশ্চিমের দেশগুলোর সামরিক মহড়া ছাড়াও ইউক্রেনের দোনবাস অঞ্চলে তুরস্কের তৈরি ড্রোন ব্যবহারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রাশিয়া।


ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তাকে পুতিন দেখছেন 'ঘরের দরজায় ঘটে যাওয়া' ঘটনা হিসেবে।


ইউক্রেন সীমান্তে সেনা?

স্যাটেলাইট ইমেজে দেখা গেছে ইউক্রেনের কাছে ক্রিমিয়ায় সেনা মোতায়েন করেছে রাশিয়া। 

দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ভেলারি জেরাসিমভ গণমাধ্যমকে বলেছেন, 'ইউক্রেনে রুশ সম্ভাব্য অভিযান নিয়ে সে সংবাদ প্রচারিত হচ্ছে তা সত্য নয়।'


কিন্তু, রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেছেন, 'পর্যাপ্ত সামরিক ও প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক। শক্রতামূলক আচরণের কঠোর জবাব দেওয়া হোক।'


বিবিসি জানিয়েছে, মস্কোর অভিযোগ—ইউক্রেন তার পূর্ব সীমান্তে সোয়া লাখ সেনার সমাবেশ ঘটিয়েছে। তারা রাশিয়া সমর্থিত বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় হামলার পরিকল্পনা করছে।


ইউক্রেন এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, রাশিয়া নিজের পরিকল্পনাকে ঢাকতে এমন 'অপপ্রচার' চালাচ্ছে।


রাশিয়ার আরও অভিযোগ—ন্যাটো ইউক্রেনকে অস্ত্র দিয়ে সংঘাতে ঠেলে দিচ্ছে। 'এসব উত্তেজনা সৃষ্টির পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের হাত আছে' উল্লেখ করে পুতিন বলেছেন, 'তারা কি মনে করে আমরা অলস বসে থাকবো?'


পুতিনের এমন মন্তব্যে ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযানের ইঙ্গিত আছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।


রাশিয়ার ফেডারেশন কাউন্সিলের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির প্রভাবশালী সদস্য ভ্লাদিমির ঝাবারভ চলতি মাসের প্রথম দিকে গণমাধ্যমকে বলেছেন, 


'বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে ৫ লাখ ইউক্রেনিয়ানের রুশ পাসপোর্ট আছে। বিদ্রোহীদের নেতা যদি রাশিয়ার সহায়তা চান তাহলে আমরা নিশ্চয় তা ফিরিয়ে দেব না।'



যুক্তরাষ্ট্রের বক্তব্য

যুক্তরাষ্ট্র পরিষ্কার ভাষায় জানিয়ে দিয়েছে, ইউক্রেনকে রক্ষায় তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ইউক্রেন আক্রান্ত হলে এমন ব্যবস্থা নেওয়া হবে 'যা কেউ কখনো দেখেনি।'


তবে ইউক্রেনে মার্কিন সেনা পাঠানোর বিষয়টি নিয়ে এখনো 'আলোচনা হয়নি' বলেও জানান তিনি।


যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিকি ফোর্ড বলেন, 'ব্রিটিশ কর্মকর্তারা ইউক্রেনে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম পাঠানোর বিষয়টি বিবেচনায় রেখেছে।'


বিবিসি জানিয়েছে, ইউক্রেন মনে করে নিজেদের রক্ষায় তারা প্রস্তুত। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিত্রো কুলেবা বলেছেন, 'আমরা নিজেরাই এই যুদ্ধে লড়বো।'


ধনী দেশগুলোর জোট জি৭ রাশিয়াকে সতর্ক করে বলেছে, ইউক্রেনে রাশিয়া কোনো অভিযান চালালে তার পরিণতি 'ভয়াবহ' হবে।



যুদ্ধ কি আসন্ন?

রাশিয়ায় মার্কিন দূতাবাসের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ব্যুরো অব ইউরোপিয়ান অ্যান্ড ইউরেশিয়ান অ্যাফেয়ার্সের দায়িত্বে থাকা অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অব স্টেট সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, 


'বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে আমরা আলোচনা করে যাচ্ছি। সম্প্রতি কিয়েভ, মস্কো ও ব্রাসেলস সফর করেছি। ইউক্রেন নিয়ে আমাদের প্রতিশ্রুতির কথা তাদের জানিয়েছি।'


'কূটনৈতিক উপায়ে রাশিয়াকে সংকট সমাধানের কথা বলা হয়েছে,' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'আগামী জানুয়ারিতে এ বিষয়ে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা হবে। এখনো সময়-তারিখ ঠিক করা হয়নি।'


ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বিষয়টি সমন্বয় করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

সম্প্রতি, বাইডেন ও পুতিন ভার্চুয়াল আলোচনায় বসলেও ইউক্রেন নিয়ে কোনো সমাধান আসেনি।


গতকাল রেডিও ফ্রি ইউরোপ জানিয়েছে—ইউরোপীয় ইউনিয়নে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভ্লাদিমির চিঝোভ বলেছেন,

 'রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে না। তবে অন্য দেশে থাকা রুশভাষীদের রাশিয়া সমর্থন করে যাবে।'


'মস্কো কোনো দেশ আক্রমণের পরিকল্পনা করছে না,' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'আগামী জানুয়ারির বৈঠক নিয়ে কাজ চলছে।'


রেডিও ফ্রি ইউরোপের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের পূর্ব সীমান্তে রাশিয়া প্রায় ১ লাখ সেনা মোতায়েন করেছে। 

এ নিয়ে পশ্চিমের দেশগুলোর উদ্বেগ প্রত্যাখ্যান করে মস্কো জানায়, নিজ দেশের যেকোনো স্থানে প্রয়োজন অনুযায়ী সেনা সমাবেশের অধিকার রাশিয়ার রয়েছে।


=====================

If you like my content, feel free to share it on your favorite social network.

Author,

#muktarhossain

#30minuteeducation

#twolearning #টুলার্নিং #two #learning #2learning #voiceofmuktar

Post a Comment

0 Comments