প্যান্ডোরা পেপার্স
বিশ্ব নেতাদের গোপন সম্পদ ও লেনদেনের তথ্য ফাঁস
মোনাকোয় পুতিনের গোপন সম্পদ, গোপনে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে জর্ডানের রাজার ৭ কোটি পাউন্ড সম্পদ, কর ফাঁকি দিয়ে টনি ব্লেয়ারের অফিস ভবন কেনা- সবই প্রকাশ পেয়ে গেল।
শুধু এরাই নন,
বিশ্বজুড়ে ৩৫
রাষ্ট্র নেতা,
৩০০ সরকারি কর্মকর্তা, সেনা কর্মকর্তা, শ
খানেক বিলিয়নেয়ারের গোপন
সম্পদ ও লেনদেন
ফাঁস করে দিল
‘প্যান্ডোরা পেপার্স’।
গ্রিক উপকথায় বিশ্বের প্রথম মানবী প্যান্ডোরার বাক্সের মতোই
এক এক করে
বেরিয়ে আসতে শুরু
করেছে বিশ্বের প্রভাবশালীদের গোপন সম্পদের খবর।
গত সাত বছর
ধরে ফিনসেন ফাইলস,
প্যারাডাইস পেপার্স, পানামা পেপার্স এবং
লাক্সলিকসের প্রতিবেদনে অনেকের গোপন সম্পদের অনেকটাই ফাঁস
করে।
তবে ২০১৬ সালে
যখন পানামা পেপার্স ঝড় তুলেছিল, তখন
এটাও বলা হয়েছিল-
ল’ ফার্ম মোস্যাক ফনসেকার কোটি নথি ফাঁস
‘গল্পের অর্ধেকটা’
মাত্র।
সেই অর্ধেক গল্পের
ধারাবাহিকতায়ই রোববার
যেন এল প্যান্ডোরা পেপার্স, অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের সেই
সংগঠন ‘ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টস’
(আইসিআইজে) এর
মাধ্যমে।
৯৫ হাজার অফশোর
ফার্মের প্রায়
১ কোটি ২০
লাখ নথি নিয়ে
সাড়ে ছয়শর বেশি
সাংবাদিকের পরিশ্রমে খুলেছে এই প্যান্ডোরার বাক্স।
নথিগুলো নিয়ে
বিবিসি, গার্ডিয়ানসহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের যৌথ
অনুসন্ধান ‘বহু বাক্স
খুলে দিচ্ছে’ বলে আইসিআইজে প্রতিবেদনের নাম
দিয়েছে প্যান্ডোরা পেপার্স।
করস্বর্গ হিসেবে
পরিচিত ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড, বেলাইজ,
পানামা, সাইপ্রাসের পাশাপাশি সংযুক্ত আরব
আমিরাত, সিঙ্গাপুর ও
সুইজারল্যান্ডসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ১৪টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে এসব তথ্য
এসেছে।
এসব নথিতে মোট
৩৫ জন রাষ্ট্র নেতার তথ্য মিলেছে। আছেন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রীরা। তাদের
মধ্যে কেউ এখনও
পদে বহাল, কেউবা
সাবেক।
৩০০ কর্মকর্তার মধ্যে
রয়েছেন ৯০টির বেশি
দেশের মন্ত্রী, বিচারক,
মেয়র, মিলিটারি জেনারেল।
যে একশ বিলিয়নেয়ারের তথ্য এসেছে তাদের
মধ্যে রয়েছে ব্যবসায়ী নেতা, রক তারকা,
বিনোদন জগতের তারকা।
------------------
Our YouTube Channel Link.. Two Learning
-----------------------
এদের অনেকে শেল
কোম্পানির মাধ্যমে সম্পদ গড়েছেন, ইয়ট
কিনেছেন, এমনকি
পেইন্টিংও কিনেছেন।
গোপন নথি ফাঁসের সবচেয়ে বড় এই ঘটনা আবারও মেলে ধরেছে চোখের সামনে থাকা অর্থনীতির আড়ালের একটি চাঞ্চল্যকর চিত্র,
যেখানে অফশোর অর্থনীতিতে বিশ্বের ধনকুবেররা কীভাবে তাদের সম্পদ
লুকিয়ে রাখেন, কীভাবে
কর না দিয়ে
কিংবা নামমাত্র দিয়ে
সম্পদের পাহাড়
গড়েন।
দুর্নীতি, অর্থ
পাচার ও বৈশ্বিক কর ফাঁকি দেওয়ার
ঘটনাগুলোর পাশাপাশি এবার সবচেয়ে বড়
যে ঘটনাটি ফাঁস
হয়েছে; তা হচ্ছে,
যুক্তরাজ্যে গোপনে
সম্পত্তি কিনতে
ধনী এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিরা কীভাবে
বৈধভাবেই নানা
কোম্পানি গঠন
করেছেন সেটি।
লন্ডনে একটি অফিস
কেনার সময় সাবেক
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার ও তার স্ত্রী
শেরি ব্লেয়ারের ৩
লাখ ১২ হাজার
পাউন্ডের কর
ফাঁকি দেওয়ার তথ্য
প্যান্ডোরার নথিতে
এসেছে। তারা একটি
অফশোর ফার্ম কিনেছিলেন, যার মালিকানায় ছিল
ওই ভবনটি।
তালিকার আছেন
জর্ডানের রাজা।
তিনি গোপনে মালিবু
এবং ওয়াশিংটন ডিসিতে
বিলাসবহুল বাড়ি
কিনেছেন এবং
লন্ডন ও দক্ষিণ-পূর্ব
ইংল্যান্ডে আটটি
সম্পত্তি কিনেছেন।
এ সপ্তাহে নির্বাচনের মুখে থাকা চেক
প্রধানমন্ত্রী কীভাবে
ফ্রান্সের দক্ষিণে ১ কোটি ২০
লাখ পাউন্ডের দুটো
ভিলা কেনার ক্ষেত্রে অফশোর কোম্পানিকে কাজে
লাগানোর বিষয়টি
চেপে গেছেন, তাও
প্রকাশ পেয়েছে ফাঁস
হওয়া নথিতে।
আজারবাইজানের ক্ষমতাসীন অলিয়েভ পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ
দীর্ঘদিনের। অর্থ
লুকাতে এই পরিবার
একটি বিশাল অফশোর
নেটওয়ার্ক গড়ে
তুলেছে।
এই পরিবার এবং
তাদের ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা যুক্তরাজ্যে ৪০ কোটি পাউন্ডের সম্পত্তি কেনাবেচায় কীভাবে জড়িত তা
উঠে এসেছে, প্যান্ডোরার নথিতে।
এছাড়াও অন্যান্যদের মধ্যে
আছেন কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উহুরু কেনিয়াত্তা ও
তার পরিবারের ছয়
সদস্য, যাদের অফশোর
কোম্পানি আছে।
গোপন সম্পদ এবং
লেনদেনের তালিকায় আরও আছেন সাইপ্রাস এবং ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট।
বিশ্বব্যাপী এমন
আরও অভিজাতদের গোপনে
অর্থ স্থানান্তরের চিত্র
উঠে এসেছে প্যান্ডোরা পেপারসে।
প্রতিবেদনে বলা
হয়েছে, গোপনীয়তা এবং
নিরাপত্তা রক্ষার
কারণে অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে সম্পত্তি কেনাটা রাঘববোয়াল বা
উচ্চ পর্যায়ের মানুষদের একটি সাধারণ প্রবণতা।
এর আগে পানামা
পেপার্স বিভিন্ন দেশের সরকারপ্রধানসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের অর্থ
পাচারের চিত্র
সামনে এসেছিল।
করজাল এড়িয়ে বেনামে
সম্পদের পাহাড়
গড়া, সেই অর্থ
পাচার করা কিংবা
অবৈধ আয়ের টাকায়
ক্ষমতার মালিক
হওয়ার ঘটনায় বেরিয়ে
এসেছিল দেড়শ রাজনীতিবিদের আসল চেহারা, যাদের
৭২ জনই ছিলেন
অতীতের এবং পরবর্তীকালের রাষ্ট্রনায়ক।
পানামা পেপার্সের নথি
ছিল ১ কোটি
১৫ লাখ, সবই
একটি কোম্পানির, তা
ধারণে লেগেছিল মোট
২ দশমিক ৬
টেরাবাইট ডেটা;
প্যারাডাইস পেপারে
নথি বেশি হলেও
১ দশমিক ৪
টেরাবাইট ডেটাতে
তা এঁটে গিয়েছিল।
আর প্যান্ডোরা পেপার্সের ১ কোটি ২০
লাখ নথি ধারণে
লাগছে ২ দশমিক
৯ টেরাবাইট ডেটা।
যার অর্থ গোপন
নথি ফাঁসের এটাই
এখন অবধি সবচেয়ে
বড় ঘটনা।
পানামা পেপার্সের ধাক্কায় আয়ারল্যান্ড ও
পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীরা ধরাশায়ী হয়েছিলেন। অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারিতে এবার
প্যান্ডোরা পেপার্সও স্পষ্টতই বিপাকে
ফেলবে বড় বড়
মুখকে।
If you like my content, feel free to share it on your favorite social network.
Author,
#muktarhossain
#30minuteeducation
#প্যান্ডোরাপেপার্স #twolearning
#PandoraPapers
0 Comments
Please do not enter any spam link in the comment box.